আ স ম আবদুর রব (ফাইল ছবি)
যোগাযোগ ডেস্ক :
করোনার ভয়াবহতায় কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত কর্মক্ষম মানুষ বেকার হচ্ছে এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। কর্মহীন মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পারলে সমাজে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হওয়ার পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে। রোববার (১৯ জুলাই) জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার এক বিবৃতি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে লকডাউনের সময় দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। উক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮৭ শতাংশ মানুষকে খাবার জোগাড় করতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। একবেলা খেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছে ৫ শতাংশ মানুষ। শিশু, গর্ভবতী মা ও বয়স্ক মানুষেরা পুষ্টিকর তথা স্বাভাবিক খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লকডাউন উঠে যাবার পরও এ দুর্দশাজনক অবস্থার তেমন একটা উন্নতি হয়নি। ৮৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ দাবি করেছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে অতীতে পাওয়া খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা ছিল খুবই অপ্রতুল; ফলশ্রুতিতে এ মুহূর্তে তারা প্রচণ্ড খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছেন। কর্মসংস্থানের পূর্ব পর্যন্ত দারিদ্রপীড়িত এ জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুরক্ষা প্রদান করে যেতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা মনে করি শুধু ত্রাণ দিয়ে কোটি কোটি মানুষকে দীর্ঘদিন কর্মহীন রাখা মানব জীবনের জন্য আত্মমর্যাদা বোধের পরিচায়ক নয়। ত্রাণ ব্যবস্থা একেবারেই সাময়িক, এটা স্থায়ী কোনো সমাধান হতে পারে না। কর্মহীন মানুষের জন্য অবশ্যই দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মসংস্থান ছাড়া কোনো ক্রমেই রাজনৈতিক-সামাজিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা এবং তা বজায় রাখা সম্ভব নয়। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সমাজের প্রয়োজনে, আর্থসামাজিক ভয়াবহতা মোকাবিলা এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের ৫ দফা প্রস্তাবনা হচ্ছে: কর্মসংস্থানের জন্য ব্যাপকভিত্তিক মাইক্রো ক্রেডিট কর্মসূচি চালু করতে হবে, কৃষক এবং কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রণোদনাসহ কৃষি পণ্য ভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে হবে, দেশে-বিদেশ অবস্থানকারী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী প্রবাসীদের ওপর সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। প্রবাসীদের অর্থায়নে ‘উপজেলা শিল্প এলাকা’ এবং ‘পৌর শিল্প এলাকা’ গঠন করতে হবে, উপ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গঠন করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে সুপার হাইওয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে, বৃহৎ পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসা চালু করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে অবিলম্বে ৫ দফা ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।