হাসপাতাল থেকে কারাগারে সম্রাট

Samrat.jpg

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফেরত নেওয়া হয়েছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইইউ) হাসপাতাল থেকে সম্রাটকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ফেরত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘বুধবার বিএসএমএমইউ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সম্রাটকে ছাড়পত্র দেন। পরে ওই হাসপাতাল থেকে তাকে কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’ ‘যেহেতু সম্রাট আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাই তাকে কারাগারের ভেতরে কারা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এজন্য তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেদিন বিকেলে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে আরও দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে।

কারাগারে নেওয়ার দুদিন পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে সম্রাটকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চারদিন চিকিৎসা দিয়ে ১২ অক্টোবর আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয় সম্রাটকে।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আফজালুর রহমান সে সময় জানিয়েছিলেন, ১৯৯৮ সালে সম্রাটের হৃদপিণ্ডের একটি ভাল্ভ ‘রিপ্লেস’ করা হয়েছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নতুন কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি।

রমনা থানার অস্ত্র মামলায় গত ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক।

ক্যাসিনো চালানোর পাশাপাশি ‘চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মত অপকর্মের’ মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।

গত বছরের ১৭ নভেম্বর ঢাকার জজ আদালত দুদকের ওই মামলায় সম্রাটকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিল। সে অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর থেকে তাকে হেফাজতে পাওয়ার কথা ছিল দুদকের কিন্তু তার আগের দিন ‘বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট’ নিয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সম্রাট। পরে তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল নিয়ে আসা হয়।

আদালত রিমান্ড মঞ্জুরের নয় মাস পর ওই হাসপাতালে গিয়েই দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৫ অগাস্ট সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top