জুলাই মাসেই সংক্রমণ আড়াই লাখ ছাড়াবে !

kkkkkk.jpg

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ গত জুন মাসে মাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চলতি জুলাই মাসে সংক্রমণ আড়াই লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ৮ মার্চের পর এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৯৯ হাজার ৩৫৭ জন। গত সাড়ে চার মাস অতিক্রম করেছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ । এই লম্বা সময়ে বাংলাদেশেও দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ১৩৩ দিনে প্রায় দুই লাখ মানুষ কাবু হয়েছেন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে অন্তত আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষের। সম্প্রতি নমুনা পরীক্ষায় ন্যূনতম ফি নির্ধারণের ফলে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার হার কমে এসেছে। এতে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের চেয়ে কমে গেছে। তবে অনুপাতিক হারে দেখা গেছে, মোট ২০ থেকে ২৪ শতাংশ নমুনায় ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, সংক্রমণ এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সংক্রমণ শুরুর মাস মার্চে ৫১ জন আক্রান্তের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এপ্রিলে সাত হাজার ৬১৬ জন আক্রান্ত এবং ১৬৩ জনের মৃত্যু। মে মাসে ৩৯ হাজার ৪৮৬ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। তখন মৃত্যু হয় ৪৮২ জনের। জুনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন দুই হাজার ৫৪৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন এক লাখ আট হাজার ৭২৫ জন। করোনার সঙ্গে এখনো লড়ছেন আরও ৮৮ হাজার ৮৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি মাত্র চার হাজার ২৮৯ জন। বাকি ৮৩ হাজার ৭৯৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী নিচ্ছেন না হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। অন্যদিকে, করোনার জন্য নির্ধারিত প্রায় ১১ হাজার শয্যাই ফাঁকা। এ জন্য অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও নানা বিষয়কে দায়ী করছেন রোগী ও তার স্বজনরা।

এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন এক হাজার ২৫৫ জন, যা ৪৯ দশমিক ২৮ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৫৫ জন, যা ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে ১৩১ জন, যা ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ; খুলনা বিভাগে ১৫৫ জন, যা পাঁচ দশমিক ৮৯ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে ৯৭ জন, যা ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ; সিলেট বিভাগে ১১৬ জন, যা ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ; রংপুর বিভাগে ৮৭ জন, যা ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, যা ২ দশমিক ২০ শতাংশ।

হাসপাতালের অব্যবস্থাপনায় কমে গেছে রোগী
চিকিৎসাহীনতা, অব্যবস্থাপনা এবং গলা কাটা খরচসহ নানা কারণে করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত হাসপাতালগুলো মানুষের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে যে পরিমাণ সিট সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেগুলো কখনোই পূর্ণ হয়নি। মোট শয্যার চার ভাগের প্রায় তিন ভাগই ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সাধারণ শয্যা রয়েছে ১৪ হাজার ৭১৫টি। এতে রোগী ভর্তি আছেন চার হাজার ৭৯ জন এবং খালি আছে ১০ হাজার ৬৩৬টি। সারা দেশে আইসিইউ শয্যা ৩৭৬টি, রোগী ভর্তি আছেন ২১০ জন এবং খালি আছে ১৬৬টি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে, মোট শয্যার সংখ্যা ১৫ হাজার ৯১টি। এর মধ্যে চার হাজার ২৮৯টি শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন এবং ফাঁকা আছে ১০ হাজার ৮০২টি শয্যা।

রাজধানী ঢাকায় সাধারণ বেডে ভর্তি আছেন এক হাজার ৯৬৯ জন করোনা রোগী এবং বেড খালি আছে চার হাজার ৩৫৬টি। ঢাকা মহানগরের আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১০৭ জন, খালি আছে ৩৫টি। চট্টগ্রাম মহানগরে সাধারণ বেড রোগী ভর্তি আছেন ৩১০ জন, খালি আছে ৩৪৭টি। আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৯ জন এবং খালি আছে ২০টি। সারা দেশে অন্যান্য হাসপাতালের সাধারণ বেড ভর্তি আছেন এক হাজার ৮০০ জন এবং বেড খালি আছে পাঁচ হাজার ৯৩৩টি। সারা দেশের অন্যান্য হাসপাতালে আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি আছেন ৮৪ জন এবং খালি পড়ে আছে ১১১টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top