ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শত প্রতিকূলতার মাঝেও থেমে থাকেনি। ইতোমধ্যে ৩১টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে, দৃশ্যমান হয়েছে চার হাজার ৬৫০ মিটার।৩০ জুন পর্যন্ত মূল সেতুর শতকরা ৮৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। নদীশাসন কাজ শেষ হয়েছে শতকরা ৭৩ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দেশে উন্নয়ন কাজে কিছুটা বাধা এলেও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন চলমান মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি ফিরেছে বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শত প্রতিকূলতার মাঝেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল রুট-৬, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে।’ তিনি ৫ জুলাই (৫ জুলাই) তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। এদিন তিনি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নমুখী সরকার। জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তায় চলমান উন্নয়ন প্রবাহ ধরে রেখেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সচেষ্ট। উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। গত দুই-তিন মাসে কিছু প্রকল্পের সীমিত আকারে কাজ হয়েছে। এখন সব কাজ চলছে পুরোদমে।’
জাইকার অর্থায়নে নতুন প্রজন্মের স্বপ্নের প্রকল্প মেট্রোরেল রুট-৬-এর কাজ এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে কর্মরত জনবলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা শেষে কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় অবস্থান নিশ্চিত করতে নির্মাণ করা হচ্ছে আবাসিক স্থাপনা। ইতোমধ্যে দুটি ফিল্ড হসপিটাল নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে বারো কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে রেললাইন। একসেট ট্রেন নির্মাণকাজ জাপানের কারখানায় সম্পন্ন হয়েছে। আরও চার সেট নির্মাণ করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে জাপান থেকে জলপথে ট্রেনগুলো নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যেই স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। করোনার শুরুর দিকে কিছুটা থমকে গেলেও এখন পুরোদমে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তল দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। করোনাকালে থেমে থাকেনি নদীর খননকাজ। ইতোমধ্যে দুই দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টিউবের দুই দশমিক তিন কিলোমিটার খনন শেষ হয়েছে। সম্প্রতি টানেলের অন্যান্য কাজেও পূর্ণ গতি ফিরে এসেছে। এ প্রকল্পের এখন পর্যন্ত অগ্রগতি শতকরা ৫৬ ভাগ।’
তিনি দাবি করেন, ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ গতি ফিরে পেয়েছে। করোনার আঘাতে প্রথমদিকে কাজ সীমিত পর্যায়ে চললেও এখন গতি পেয়েছে। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের ফান্ড সংকট দূর হয়েছে।’
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের কাজ চলমান বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘তা সীমিত পরিসরে চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর-ঢাকা করিডোরের দ্রুত মেরামত কাজ শেষ করা হয়েছে।’
এছাড়া ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পে এডিবি অর্থায়নে চূড়ান্ত সম্মতি জ্ঞাপন করেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এডিবির নিজস্ব বাজেটে অর্থায়ন অনুমোদন পেয়েছে। বর্তমানে নকশা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। শিগগিরই প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করা হবে।’
এদিকে ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান বলে দেশবাসীকে জানান তিনি। তিনটি প্যাকেজে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। এর মধ্যে দুটি প্যাকেজের কাজ চলছে। অপর প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে।
কক্সবাজারের মাতারবাড়ি সংযোগ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজও জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে আবার শুরু হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ২৪ শতাংশ।’