যোগাযোগ অনলাইন ডেস্ক :
ব্যারিস্টার হয়েও আইন ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নেননি তিনি,হয়েছিলেন সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ। টানা দুই যুগ ১৯৭৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে অবসরে যান। রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করেছেন বহুবার। মৃত্যুর আগেই স্বেচ্ছায় দুই চোখ এবং দেহ দান করে গেছেন। ত্যাগী, সংগ্রামী এই ব্যক্তির পুরো নাম জ্যোতিরিন্দ্র বসু। সবার কাছে পরিচিত জ্যোতি বসু নামে।
১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতার হ্যারিসন রোডে (বর্তমানে মহাত্মা গান্ধী) জন্ম। তাঁর পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের সোনারগাঁর বারদীতে। শৈশবের কিছুকাল এখানে কেটেছে। ডা. নিশিকান্ত বসু ও হেমতলা বসুর তৃতীয় সন্তান জ্যোতি ছয় বছর বয়সে ধর্মতলার লরেটো স্কুলে ভর্তি হন। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন শেষে ১৯৩৫ সালে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার্থে যুক্তরাজ্যে যান। লন্ডনে ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে গড়ে ওঠা ‘লন্ডন মজলিশ’-এর তিনি ছিলেন প্রথম সম্পাদক।
একপর্যায়ে তিনি বিশিষ্ট কমিউনিস্ট দার্শনিক ও লেখক রজনী পাম দত্তের আদর্শে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন। ব্যারিস্টারি পড়ার পর ১৯৪০ সালে ভারতে ফিরে এসে ওই বছরই তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সার্বক্ষনিক হিসাবে কাজ শুরু করেন।দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি নির্বাচিত হন বসু। এরপর ১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের কোয়ালিশন সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৭৭ সালের ২১ জুন শপথ নেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে।
১৯৯৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম বিবেচিত হলেও তিনি পার্টির সিদ্ধান্তে তা প্রত্যাখ্যান করেন। কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের অনুসারী জ্যোতি বসু আজীবন সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি মহান এই নেতা মৃত্যুবরণ করেন।