নিজস্ব প্রতিবেবদকঃ
দেশ রাজনৈতিক মোল্লাদের ফতোয়াবাজী না, সংবিধান অনুযায়ী চলবে। সংবিধান বিরোধী ফতোয়াবাজী নিষিদ্ধ করতে হবে। রাষ্ট্রদ্রোহী ফতোয়াবাজদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও শাস্তি দিতে হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি আজ ১৩ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১:৩০ টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সংবিধান ও ভাস্কর্যের প্রশ্নে কোনো ছাড় না দিয়ে, আপস-সমঝোতা-মাঝামাঝি পথ গ্রহণ না করে রাষ্ট্রদ্রোহী রাজনৈতিক মোল্লা-ফতোয়াবাজ-ধর্মব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে ঢাকা মহানগর জাসদ আয়োজিত সমাবেশে ভাষনদানকালে এ বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মানি কিন্তু ভাস্কর্য মানিনা-এই কথা বলে রাজনৈতিক মোল্লারা তাদের কথার সূর পাল্টালেও এদের ছাড় পাওয়ার, পার পাওয়ার কোনো সুযোগা নাই। সংবিধান-ভাস্কর্যের বিষয়ে কোন ছাড়, সমঝোতা, আপস, মাঝামাঝি কোনো পথ নাই। সংবিধানের কোনো বিকল্প নাই, ভাস্কর্যেরও কোনো বিকল্প নাই। বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী চলবে আর ভাস্কর্যও থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের রাজাকার, রাজনৈতিক মোল্লা, ফতোয়াবাজদের কাছ থেকে নতুন করে ইসলাম শিখতে হবে না। জামায়াত, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী, হেফাজত, খেলাফত, মজলিশ, বাবু নাগরি, মামুনুল, চরমোনাই পীরের মত রাজনীতিক মোল্লা, ধর্মব্যবসায়ী, ফতোয়াবাজ, তেঁতুলমার্কা হুজুরদের জন্মের কয়েক শত বছর আগে থেকেই বাংলাদেশের মুসলমানরা মুসলমান। বাংলাদেশের মুসলমানরা পারিবারিকভাবেই দাদা-দাদি, নানা-নানি, আব্বা-আম্মার কাছ থেকে ধর্ম শিখে। ঘরে-মসিজিদে-মক্তবে কায়দা, আমপারা, শিপারা, নামাজ পড়া, রোযা রাখা শিখে।
হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, রাজাকার, রাজনৈতিক মোল্লা, ফতোয়াবাজরা, ধর্মব্যবসায়ীরা আলেম, ওলামা, ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলামী দার্শনিক, ধর্মীয় নেতা না। এরা মওদুদি, গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, সবুর খানের মত ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে। এদের দল আছে। নির্বাচনী মার্কা আছে। এরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে চায়। এরা পবিত্র ধর্মকে রাজনীতির সাথে মিশিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা দেয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ, ধর্মপ্রাণ মানুষ রাজনৈতিক মোল্লাদের ধর্মের নামে অশান্তি সৃষ্টি, ভাগাভাগি, হানাহানি, রক্তারক্তির হিংসাত্মক রাজনীতিকে কখনই প্রশ্রয় দেয়নি, এখনও দিবে না। যারা রাজনৈতিক মোল্লাদের মাঠে নামিয়ে অশান্তি, হানাহানি, রক্তারক্তি করে সরকার উৎখাত করে অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাবার স্বপ্নে মশগুল আছেন তাদের স্বপ্ন দিবাস্বপ্ন দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না।
তিনি আরো বলেন, মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেলে রাজনৈতিক মোল্লাদের বেহিসাবি আয়-রোজগার-সম্পদের হিসাব আদায় করা শুরু করবে। মাদ্রাসার ছাত্রদের বলৎকারে হিসাব নিবে। বিচার করবে। জনগণ ইমাম, মোয়াজ্জিন, খতিব, মাওলানা, মৌলভী সাহেবদের সম্মান করে। কিন্তু তারা নামাজ পড়ানো, ধর্ম শিক্ষা দেয়া বাদ দিয়ে বিএনপি-জামাতের ভাড়াটে খেলোয়ার রাজনৈতিক মোল্লাদের উস্কানিতে পা দিয়ে রাজনীতি করা শুরু করেন, নিজেদের রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন তাহলে কিন্তু মানুষ মসজিদে মসজিদে কথা বলা শুরু করবে। মানুষ চায় ইমাম, মোয়াজ্জিন, খতিব, মাওলানা, মৌলিভী সাহেবরা রাজনৈতিক বিতর্কে না জড়িয়ে নিজেদের সম্মানিত অবস্থান ধরে রাখবেন।
জনাব হাসানুল হক ইনু এমপি রাজনৈতিক মোল্লা, ধর্মব্যবসায়ী, ফতোয়াবাজ, রাজাকারদের কোনো ছাড় না দিয়ে কঠোরভাবে দমন করে দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে রাখতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. রবিউল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, নইমুল আহসান জুয়েল, মোঃ মোহসীন, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, ঢাকা মহানগর উত্তর জাসদের সভাপতি সফি উদ্দিন মোল্লা, জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন, জাসদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় নারী জোট নেত্রী কাজী সালমা সুলতানা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (হা-না) কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হক ননী প্রমূখ।
সমাবেশ শেষে জাসদের নেতা-কর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, পল্টন, তোপখানা, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা, গুলিস্তান এলাকা প্রদক্ষিন করেন।