জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্কপ এর অন্যতম নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আজ শনিবার ৪ জুলাই ২০২০ সংগঠনের দফতর সম্পাদক রাজিব আহমেদ প্রেরিত এক বিবৃতিতে জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্কপ এর অন্যতম নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এমনটা বলেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, পাটকল রক্ষায় সকল দাবী উপেক্ষা করে ২৫ হাজার শ্রমিক এবং তাদের পরিবারকে কর্মহীন করে রাষ্ট্রয়াত্ব সকল পাটকল বন্ধ করা সরকারের একটি গণবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পরিপন্থি সিদ্ধান্ত।
গত ২৮ জুন লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ২৬টি পাটকল বন্ধ করে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন শ্রমিককে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ দেওয়ার ঘোষণা করেছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। গত কয়েক দশক ধরে লোকসানের অজুহাত দিয়ে একের পর এক পাটকল বন্ধ বা বেসরকারিকরণ করা হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার আগে ষাটের দশকে পুরো পাকিস্তানের রফতানি আয়ের প্রধান উৎস ছিল এই পাট। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম স্বপ্ন ছিল এ পাটকে ঘিরেই। ভাবনা ছিল এ পাট বাংলাদেশের মানুষেরই কাজে লাগবে এবং তা বাংলাদেশকে যথাযথ উন্নতির পথে নিয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। প্রয়োজন অনুসারে মেশিনপত্র আধুনিকায়নে বিনিয়োগ করলে উৎপাদন বাড়ানো যেত। কিন্তু সরকার বিভিন্ন সময়ে মজুরি না দিয়ে কারখানা বন্ধ রেখে অচলাবস্থা তৈরি করেছে। ইচ্ছা করে বছর বছর লোকসানের পাল্লা ভারী করা হয়েছে। ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাংক ঋণ নিয়ে শুরু হলো পাট শিল্প উন্নয়ন কর্মসূচি। কিন্তু আসলে এই উন্নয়ন কর্মসূচি পাটশিল্প নবায়ন, বৈচিত্র্যকরণ বা সম্প্রসারণের কোনো কর্মসূচিই ছিল না; ছিল ঋণের টাকায় শিল্প বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কর্মসূচি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাকালে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তরণের জন্য সারা পৃথিবী যখন কর্মসংস্থান তৈরির দিকে মনোযোগ দিয়েছে তখন বাংলাদেশ সরকার শ্রমিক এবং তাদের পরিবারকে কর্মহীন করে উলটোপথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। করোনা দুর্যোগে সারাদেশে শ্রমজীবী মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে অর্ধাহার-অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিনযাপন করছে, সেই সময় সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ২৬ টি পাটকল বন্ধ করে স্থায়ী, অস্থায়ী, বদলীসহ প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক এবং তাদের উপর নির্ভরশীল লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষকে বেকারত্ব আর অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়ার আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন এই শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে যাবেন। কোনরকম গোল্ডেন হ্যাণ্ডশেক ছাড়াই কাজ হারিয়ে পথে বসবে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা। অথচ গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের জন্য সরকার ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এ র গবেষনা করা প্রস্তাবনায় দেখা গেছে মাত্র ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে অধুনিকীকরণ করে কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও লাভজনক করা সম্ভব ছিল।
নেতৃবৃন্দ, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ করেন। সেই সাথে করোনাকালে রাষ্ট্রীয় পাটকলকে বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকারত্বে ঠেলে দেওয়ার গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করার আহবান জানান।